পুরান ঢাকা শ্যামবাজারে ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান হত্যা মামলায় আগ্নেয়াস্ত্রসহ প্রধান আসামি ও তার সহযোগী গ্রেফতার
প্রতিবেদক – ইয়ামিন ইসলাম ইমন ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি
রাজধানীর শ্যামবাজারে ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান (৫৫) হত্যা মামলায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রসহ প্রধান আসামি ও তার সহযোগী’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব।গত ১১ ডিসেম্বর ( বৃহস্পতিবার) দুপুর আনুমানিক ১২.০০ ঘটিকার সময় রাজধানীর পুরান ঢাকার সূত্রাপুর থানাধীন শ্যামবাজার এলাকায় মাওলাবক্স চক্ষু হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়িক বিরোধের জেরে শ্যামবাজার কাঁচাবাজার মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি ও মসলা ব্যবসায়ী আব্দুর রহমান (৫৫)’কে গুলি করে হত্যা করা হয়।এই ঘটনায় ডিএমপি’র সূত্রাপুর থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়, যার মামলা নং- ০৭, তারিখ- ১১/১২/২০২৫ খ্রি., ধারা- ৩০২/৩৪ পেনাল কোড। ঘটনাটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় এবং র্যাব আসামিদের গ্রেফতারে তাৎক্ষণিকভাবে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। গত ১১ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক ২২.০৫ ঘটিকার সময় র্যাব-১০ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল, র্যাব-৪ এর সহযোগিতায়, আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় ডিএমপি’র দারুস সালাম থানাধীন কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি এমামুল এহসান নয়ন (৪৬), পিতা- রহমত উল্লাহ, সাং- শ্যামপুর, থানা- কদমতলী, ডিএমপি, ঢাকা এবং তার সহযোগী অয়ন গাঙ্গুলী পলাশ (৪৪), পিতা- মৃত নরেজ গাঙ্গুলী, সাং- শাহপরান, থানা- দাউদকান্দী, জেলা- কুমিল্লা’দ্বয়কে ঘটনার ১২ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর আসামি এমামুল এহসান নয়ন’কে জিজ্ঞাসাবাদে ডিএমপি’র কদমতলী থানাধীন শ্যামপুর এলাকা হতে ০১টি বিদেশী রিভলভার, ২০ রাউন্ড তাজা কার্তুজ ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ০২টি ফায়ার করা কার্তুজের খোসা উদ্ধার করা হয়। জব্দকৃত আলামতসহ গ্রেফতারকৃতদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, আসামি এমামুল এহসান নয়ন (৪৬) রহমত উল্লাহ গ্রুপ অব কোম্পানীর চেয়ারম্যান ও মসলার ব্যবসায়ী। ব্যবসা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ২০২৪ সালের অক্টোবরে ভিকটিম আব্দুর রহমানের মাধ্যমে ৬০ লাখ টাকায় শ্যামবাজার কাঁচাবাজারের একটি দোকান ক্রয় করেন। দোকান হস্তান্তরের সময় ভিকটিম অতিরিক্ত ২৪ লাখ টাকা দাবি করলে তাদের মধ্যে তীব্র ব্যবসায়িক বিরোধ সৃষ্টি হয়। এই বিরোধ থেকেই নয়ন প্রায় এক বছর ধরে ভিকটিমকে হত্যার পরিকল্পনা করে এবং আসামি নয়ন ভিকটিমের গতিবিধি গোপনে পর্যবেক্ষণ করে। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গত সেপ্টেম্বর মাসে ১ লাখ ৫ হাজার টাকায় একটি বিদেশী রিভলভার ও কার্তুজ ক্রয় করে এবং নেপালে যাওয়ার উদ্দেশ্যে অন-এ্যারাইভ্যাল ভিসার জন্য অনলাইনে আবেদন করে।পরিকল্পনা অনুযায়ী নয়ন ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখের ঢাকা-টু-কাঠমুন্ডু ফ্লাইটের টিকিটও বুকিং করেন। গত ১১ ডিসেম্বর সকাল ০৯.৩০ ঘটিকায় নয়ন তার স্ত্রী’র ভাই পলাশের সঙ্গে পোস্তগলায় দেখা করে হত্যার চূড়ান্ত ছক তৈরি করে। পরবর্তীতে ভিকটিম আব্দুর রহমান মাওলাবক্সের গলি দিয়ে দোকানে যাওয়ার সময় চক্ষু হাসপাতালের সামনে পৌঁছালে নয়ন হাতে থাকা বিদেশী রিভলভার দিয়ে প্রথমে বুকে গুলি করে এবং মাটিতে পড়ে গেলে মাথায় গুলি করে তাকে হত্যা করে। ঘটনার পর তারা নারায়ণগঞ্জে আত্মগোপনের চেষ্টা করে এবং সেখানে নিরাপদ আশ্রয় না পেয়ে মিরপুর-১০ থেকে কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ডে এসে পালানোর চেষ্টা করার সময় র্যাবের আভিযানিক দল তাদের গ্রেফতার করে।
প্রযুক্তি সহায়তায়: softhost
Leave a Reply